Thus Spake Prasantada-3

প্রশান্তদা উবাচ -৩

আজ সকালে প্রশান্তদাকে ফোন করলাম , " তোমাদের আমেরিকায় কি হচ্ছে? ট্রাম্প সাহেবতো কাঁপিয়ে দিচ্ছেন , গ্রীন কার্ডধারিদেরও নাকি ঢুকতে দিছে না? তোমরা এর প্রতিবাদ করছো না?"

"দ্যাখ ভাই আমরা আদার ব্যাপারী , জাহাজের খবরে আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই । আমি অর্থনীতির অধ্যাপক , তাও আবার নেব্রাস্কায় , এখানে নিউ ইয়র্কের উত্তেজনা আসে না । কিন্তু তোরা করেছিস কি ? জিনি কোএফিসিয়েন্ট তো ভারতবর্ষ ঠিক রাশিয়ার পরেই , এতো বৈষম্য তো ইন্দিরা বা নেহেরুর রাজত্বেও ছিল না । দেশটা তো ক্রমশ গড় গড় করে জাহান্নমের দিকেই যাত্রা করেছে ।"

"সেকি? কোটি কোটি মানুষ তো অসীম দরিদ্রের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে, গ্রামের মানুষের আয় বেড়েছে । তুমি যা যুক্তি দেখাচ্ছ তাতে তো বলা যায় আমরা ব্রিটিশ রাজত্বে এর থেকে ভালো ছিলাম। আমেরিকার বৈষম্য তো ভয়াবহ -ওয়াল স্ট্রীট দখল করো আন্দোলন তো সেই জন্যেই হয়েছিল । যে কারণেই ফোন করলাম।, তোমরা সবাই মিলে ট্রাম্প সাহেবের তুঘলকী আদেশের প্রতিবাদ করো , কি করছেন উনি?"

প্রশান্তদা বললেন , " আমেরিকার মানুষ তো প্রতিবাদ করেছে । মামলা আদালতে , এখন সাব-জুডিস ব্যাপারে আমরা কোনো মন্তব্য করছি না , যথা সময়ে আমরা যা বলার বলবো । এখন সমালোচনা করলে হিতে বিপরীত হবে । আমরা অর্থনীতিবিদরা রাজনীতির মধ্যে জড়াবো না , সে তোরা যাই ভাবিস । এখন আমাদের স্ট্রাটেজি হলো ধরি মাছ , না ছুঁই পানি । তবে অনেকেই যদি সই করে প্রতিবাদ করে তবে আমিও চুপিসাড়ে সই করতে রাজি , আগ বাড়িয়ে শুধু শুধু ঝামেলায় জড়াবো না । লোকটা বেশ ব্যাঁকা , আমাদের দেশ ছাড়া করতে পারে । দেশের বাইরে গিয়ে আমাদের হাল হয়ে যাবে ট্রটস্কির মতো ।"

"তাতেই বা কি, আপনি নেব্রাস্কা ছেড়ে কলকাতায় এসে যাদবপুরে পড়াবেন !"

"আরে পাগল না পেট খারাপ । তোদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভীষণ রাজনীতি , তৃণমূলের ধামা না ধরলে কিস্সু হবে না , এছাড়া "হোক কলরব" তো লেগেই আছে , তারপর জলে আর্সেনিক , বায়ু দূষিত , পাড়ায় তোলাবাজি , রাস্তায় আবর্জনা -নেব্রাস্কাতে বেশ আছি ! তবে হ্যাঁ ! দেশে অনাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবো , কেউ আমাকে দাবায়া রাখতে পারবা না ।"