ঝড়ে কাক মরে , ফকিরের কেরামতি বাড়ে
সে বেশ অনেকদিনের কথা , তখন প্রশান্তদাদের খাতির একটু বেশি ছিল ।
যা তিনি বলতেন সবাই ভাবতো নিখাদ সত্য! বাবা ----আটলান্টার ডক্টরেট তাও ,আবার অর্থনীতিতে , দুরূহ সব তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করে নেব্রাস্কাতে !
...
একবার প্রশান্তদা এলেন আসানসোলে, পৈতৃক ভিটায় , তখন তাঁর কাকা একটা মুরগির পোল্ট্রি চালান , লেগহর্ন মুরগির !
হঠাৎ মুরগীর খামারে মড়ক লাগলো , তখন বলতো রানীক্ষেত রোগ , কলেরার থেকেও ভয়ঙ্কর।
কাকা বললেন, " প্রশান্ত তুই তো আমাদের পরিবারের তারকা , কি করি বল দেখি , সব মুরগি মরে যাচ্ছে !"
প্রশান্ত দ্বিধা বলে কিছু জানেন না , বললেন, " কাকা তুমি সারা রাত ধরে কালোয়াতি গান শোনাও মুরগীদের ।"
কাকা গায়কদের এনে রাত ভোর কালোয়াতি গান শোনালেন।
সকালে দেখা গেলো অর্ধেক মুরগী সবুজ বাঝ্য করে দেহ ত্যাগ করেছে !
প্রশান্তদা বললেন ," কুচ পরোয়া নেই , তুমি কাওয়ালি শোনাও !"
খান সাহেবকে কিছু পারিশ্রমিক দিয়ে মুরগীবাবাজিদের সমস্ত রাত কাওয়ালি শোনানো হলো !" পরের দিন সকাল, আরো অর্ধেক মুরগি পগার পার! কাকা প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন ," বাবা প্রশান্ত সর্বস্বান্ত হয়ে যাবো , কি করি বোলো!"
প্রশান্তদা বললেন, " ঘাবড়াচ্ছো কেন আমি বাঘা বাঘা অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান করেছি , লিবিয়ার মুদ্রাস্ফীতি, পেরুর খাদ্য সংকট , ভিয়েতনামের ছাগল সুমারি , মুরগির রানীক্ষেত তো নস্যি কাকু ! তুমি গজল শোনাও , কলকাতার কবি লিখেছিলেন, গেয়েছিলেন কলকাতার একজন গায়িকা, সেই বিখ্যাত গান, আজ জানে কি জিদ না করো !"
অনেক কষ্ট করে নিয়ামতপুর থেকে একজনকে নিয়ে আসা হলো , তিনি খনে খনে গলায় সেই গানটির সপিন্ডকরণ করলেন। এবং দুঃখে না গ্লানিতে না রোগে জানি না , সূর্যোদয়ের আগেই সমস্ত মুরগী ঈশ্বরের কাছে চলে গেলেন !
কাকা বুক ফাটিয়ে কেঁদে বললেন ," বাবা প্রশান্ত আমার সর্বনাশ হয়ে গেলো।"
প্রশান্ত বললেন, " খুব পরিতাপের কথা কাকা , আমার কিন্তু আরো কয়েকটি দারুন আইডিয়া ছিল !"